গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১:৩৭ পূর্বাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
অনলাইননিউজ: গণপূর্ত অধিদপ্তরের ইডেন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুস সাত্তারকে গত জুলাই মাসে বদলি করা হলেও তিনি নতুন কর্মস্থলে যোগ দেননি। তদবির করে সময় বাড়িয়ে নেন আরও এক মাস। এই সুযোগে চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতাধীন প্রায় ৯ কোটি টাকার কাজ তড়িঘড়ি করে অনুমোদন দেন ঠিকাদারদের। অভিযোগ রয়েছে, এসব কাজের বিনিময়ে তিনি ঠিকাদারদের কাছ থেকে ১০ শতাংশ কমিশন নিয়েছেন। এক মাসেই প্রায় ৯০ লাখ টাকা কমিশন গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সচিবালয়ের অভ্যন্তরে আটটি ভবনের সংস্কারের জন্য সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয় দেখানো হয়। কিন্তু বাস্তবে বেশ কিছু কাজ না করেই কাগজপত্রে সম্পন্ন দেখানো হয়েছে। এতে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা লোপাট হয়, যার একটি বড় অংশ ভাগ পান নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তারসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। গোপন দরপত্রের নামে এসব অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, গত তিন বছরে ইডেন গণপূর্ত বিভাগে সংস্কার কাজের নামে প্রায় ১৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। শুধু সংস্কার কাজ না করেই কমিশন বাবদ নির্বাহী প্রকৌশলী সাত্তারের প্রাপ্ত অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ছয় কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, সরেজমিন তদন্তে গেলে এসব অনিয়মের প্রমাণ মিলবে।
সরকারি নথি অনুযায়ী, ইডেন গণপূর্ত বিভাগ সচিবালয়ের মোট নয়টি ভবনের সংস্কারের জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেড় শতাধিক কাজের তালিকা তৈরি করে। খরচ দেখানো হয় প্রায় ২২ কোটি টাকা। বিগত তিন অর্থবছরে ব্যয় দেখানো হয় প্রায় ৬০ কোটি টাকা। তবে তদন্তে দেখা গেছে, এসব কাজের একটি বড় অংশই আসলে বাস্তবে হয়নি। বরং একই ভবনের একই ফ্লোরে একই কাজকে কয়েকটি ভাগে দেখিয়ে বারবার খরচ দেখানো হয়েছে।
বছরের পর বছর একই ধাঁচের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে—দরজা-জানালা মেরামত, রঙ করা কিংবা ছোটখাটো সংস্কারের নামে বিল দেখানো হলেও কাজের বাস্তব অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রকৌশলী সাত্তার ও অন্যান্য কর্মকর্তারা ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশ করে কাজ না করেই বিল উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে অর্থবছরের শেষ সময় মে ও জুন মাসে বেশিরভাগ কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে, যা অনিয়মের সন্দেহ আরও বাড়াচ্ছে।
বিতর্কিত এই নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সাত্তারকে সম্প্রতি ঢাকা গণপূর্ত বিভাগ-২–এ প্রাইজ পোস্টিং দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।