মঙ্গলবার ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ই-পেপার   মঙ্গলবার ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ


গুরুত্ব হারাচ্ছে চামড়ার বাজার
প্রকাশ: ১৩ জুলাই, ২০২২, ২:৪০ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ

গুরুত্ব হারাচ্ছে চামড়ার বাজার

“যে কারণে গুরুত্ব হারাচ্ছে চামড়ার বাজার” “ঈদের আগে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৭ টাকা বেশি নির্ধারণ করে দেয় সরকার। এতে চামড়ার দাম কিছুটা বাড়তি পাওয়ার আশা করছিলেন মৌসুমি ব্যবসায়ী এবং মাদ্রাসা ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষ। তবে শেষ পর্যন্ত সে আশায় গুড়ে বালি। গতবারের মতো এবারও তলানিতে চামড়ার দাম। এবার ছোট আকারের গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। মাঝারি আকারের চামড়া মানভেদে ৩০০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং বড় আকারের গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায়। অন্যদিকে ছোট আকারের গরু, খাসি ও বকরির চামড়া কিনতে অনীহা দেখাচ্ছেন আড়তদাররা। ছোট আকারের গরুর চামড়া ১০০ টাকা দিয়েও বিক্রি করতে হয়েছে। আর খাসি ও বকরির চামড়া ১০ টাকার বেশি বিক্রি হচ্ছে না।চামড়ার দাম কম হওয়া প্রসঙ্গে ট্যানারি মালিক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম চামড়ার পণ্যের জয়জয়কার চলছে। এজন্য চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা অনেকটা কমে গেছে। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশি চামড়া কিনছে না। ফলে বাংলাদেশি চামড়ার মূল ক্রেতা এখন চীন। তারা দাম দেয় কম। চাইনিজ পণ্যগুলো পশুর চামড়ার পরিবর্তে আর্টিফিশিয়াল লেদার দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে। এতে তারা কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারে। এ জন্য দিনের পর দিন চামড়ার চাহিদা কমে আসছে। অন্যদিকে পোস্তার ব্যবসায়ীরা জানান, একেকটি গরুর চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে লবণ ও শ্রমিকের মজুরিসহ গড়ে ৩০০ টাকা খরচ করতে হয়। গত বছরের তুলনায় এবার লবণের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এতে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ করতে খরচ কিছুটা বেশি পড়ছে।এ বিষয়ে বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ) সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান মানবজমিনকে বলেন, দেশে অধিকাংশ পশুর চামড়া অনভিজ্ঞ মানুষদের দিয়ে কাটানো হয়। এতে অনেক চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। আমরা বার বার বলা সত্ত্বেও প্রতিবারই এমন সমস্যা দেখা যাচ্ছে। তারা যদি আইডিয়া করে ২৫ বর্গফুটের একটা চামড়া আমাদের এখানে নিয়ে আসে। কিন্তু এখানে আসলে সেটা ২০ থেকে ২১ বর্গফুট হয়ে যায়। কারণটা হলো অনভিজ্ঞতা। সেক্ষেত্রে যদি ৪ বর্গফুটের ঘাটতি হয়, তাহলে এখানেই তো ২০০ টাকা কমে যাচ্ছে। চোখের আইডিয়ার উপর কেনাকাটা করা হয়। ছাগলের চামড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চামড়ার বাজার নির্ভর করে আন্তর্জাতিক বাজারের উপরে। আন্তর্জাতিক বাজারে ছাগলের চামড়ার চাহিদা নেই। তাহলে এখানে আমাদের কি করার আছে। তিন বর্গফুটের ছাগলের চামড়া দিয়ে এখন আর কিছু হয় না। এই ফ্যাশনটা এখন আর নাই। তবে ৫ বর্গফুটের চামড়াগুলোর চাহিদা এখনো রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশি চামড়ার মূল ক্রেতা এখন চীন। বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াতউল্লাহ বলেন, অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও চামড়ার ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মূল বিষয়টি হচ্ছে আমরা ব্যবসায়ীরা নিজেরা ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায় চামড়া কিনেছি। এ ছাড়া আমাদের জন্য যারা চামড়া সংগ্রহ করে তারাও কম দামে চামড়া ক্রয় করেনি। সরকার নির্ধারিত দামেই আমরা পশুর চামড়া কিনছি। তবে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা খুম কম দামে পশুর চামড়া সংগ্রহ করছে বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ছাগলের চামড়ার দাম কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোরবানির আগেও ছাগলের চামড়ার দাম বেশি ছিল। ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। আসলে কোরবানির সময় অনভিজ্ঞ লোকদের দিয়ে চামড়া কাটানো হয়ে থাকে। এ জন্য চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। যার কারণে এমনটা হয়ে থাকে। তিনি বলেন, চলতি বছর ট্যানারিগুলো প্রায় ১ কোটির মতো চামড়া সংগ্রহ করতে পারবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।চামড়া খাতের সার্বিক পরিস্থিতি জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান দিলজাহান ভূঁইয়া বলেন, বিশ্বজুড়ে চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা কমে গেছে। কারণ বর্তমান বিশ্ব অর্থনৈতিকভাবে খুবই খারাপ পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া আর্টিফিশিয়াল লেদারের প্রভাবেও চামড়ার চাহিদা অনেকটা কমে গেছে। তিনি বলেন, আগে আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও চীনে চামড়া রপ্তানি করতাম। কিন্তু বর্তমানে আমাদের বড় বাজার শুধুমাত্র চীন। সেখানে ৯০ শতাংশ চামড়া রপ্তানি করা হয়। কিন্তু আগে আমাদের প্রধান চামড়া বাজার ছিল কোরিয়া। কোরিয়া আমাদের থেকে সরে গেছে। আমার যখন হাজারীবাগ থেকে হেমায়েতপুর যাই, তখনো অনেক বায়ার চলে গেছে। পরিবেশসম্মত উপায়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাত না হলে ইউরোপ, আমেরিকাসহ অন্যান্য দেশগুলো চামড়া কিনবে না। সেজন্য পরিবেশবান্ধব চামড়া শিল্পনগরী করে আন্তর্জাতিক সংগঠন লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ নিতে হবে। এই সনদ পেতে হলে আবার পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার (সিইটিপি) সনদ পেতে হবে। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে সেটা পাওয়া যাচ্ছে না। তারা বলছে, চামড়া শিল্পনগরের সিইটিপি এখনো পুরোপুরি কার্যকর করা যায়নি। ওদিকে  কেমিক্যালের লাইসেন্স নবায়ন করতে হলেও সিইটিপি সনদ দিতে হয়। তাছাড়া নবায়ন করা যায় না। এ জন্য  কেমিক্যাল আমদানি করতেও সমস্যায় পড়তে হয়। এতে চামড়া পচে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। “যে কারণে গুরুত্ব হারাচ্ছে চামড়ার বাজার” “ঈদের আগে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৭ টাকা বেশি নির্ধারণ করে দেয় সরকার। এতে চামড়ার দাম কিছুটা বাড়তি পাওয়ার আশা করছিলেন মৌসুমি ব্যবসায়ী এবং মাদ্রাসা ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষ। তবে শেষ পর্যন্ত সে আশায় গুড়ে বালি। গতবারের মতো এবারও তলানিতে চামড়ার দাম। এবার ছোট আকারের গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। মাঝারি আকারের চামড়া মানভেদে ৩০০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং বড় আকারের গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায়। অন্যদিকে ছোট আকারের গরু, খাসি ও বকরির চামড়া কিনতে অনীহা দেখাচ্ছেন আড়তদাররা। ছোট আকারের গরুর চামড়া ১০০ টাকা দিয়েও বিক্রি করতে হয়েছে। আর খাসি ও বকরির চামড়া ১০ টাকার বেশি বিক্রি হচ্ছে না।চামড়ার দাম কম হওয়া প্রসঙ্গে ট্যানারি মালিক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম চামড়ার পণ্যের জয়জয়কার চলছে। এজন্য চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা অনেকটা কমে গেছে। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশি চামড়া কিনছে না। ফলে বাংলাদেশি চামড়ার মূল ক্রেতা এখন চীন। তারা দাম দেয় কম। চাইনিজ পণ্যগুলো পশুর চামড়ার পরিবর্তে আর্টিফিশিয়াল লেদার দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে। এতে তারা কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারে। এ জন্য দিনের পর দিন চামড়ার চাহিদা কমে আসছে। অন্যদিকে পোস্তার ব্যবসায়ীরা জানান, একেকটি গরুর চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে লবণ ও শ্রমিকের মজুরিসহ গড়ে ৩০০ টাকা খরচ করতে হয়। গত বছরের তুলনায় এবার লবণের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এতে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ করতে খরচ কিছুটা বেশি পড়ছে।এ বিষয়ে বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ) সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান মানবজমিনকে বলেন, দেশে অধিকাংশ পশুর চামড়া অনভিজ্ঞ মানুষদের দিয়ে কাটানো হয়। এতে অনেক চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। আমরা বার বার বলা সত্ত্বেও প্রতিবারই এমন সমস্যা দেখা যাচ্ছে। তারা যদি আইডিয়া করে ২৫ বর্গফুটের একটা চামড়া আমাদের এখানে নিয়ে আসে। কিন্তু এখানে আসলে সেটা ২০ থেকে ২১ বর্গফুট হয়ে যায়। কারণটা হলো অনভিজ্ঞতা। সেক্ষেত্রে যদি ৪ বর্গফুটের ঘাটতি হয়, তাহলে এখানেই তো ২০০ টাকা কমে যাচ্ছে। চোখের আইডিয়ার উপর কেনাকাটা করা হয়। ছাগলের চামড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চামড়ার বাজার নির্ভর করে আন্তর্জাতিক বাজারের উপরে। আন্তর্জাতিক বাজারে ছাগলের চামড়ার চাহিদা নেই। তাহলে এখানে আমাদের কি করার আছে। তিন বর্গফুটের ছাগলের চামড়া দিয়ে এখন আর কিছু হয় না। এই ফ্যাশনটা এখন আর নাই। তবে ৫ বর্গফুটের চামড়াগুলোর চাহিদা এখনো রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশি চামড়ার মূল ক্রেতা এখন চীন। বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াতউল্লাহ বলেন, অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও চামড়ার ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মূল বিষয়টি হচ্ছে আমরা ব্যবসায়ীরা নিজেরা ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায় চামড়া কিনেছি। এ ছাড়া আমাদের জন্য যারা চামড়া সংগ্রহ করে তারাও কম দামে চামড়া ক্রয় করেনি। সরকার নির্ধারিত দামেই আমরা পশুর চামড়া কিনছি। তবে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা খুম কম দামে পশুর চামড়া সংগ্রহ করছে বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ছাগলের চামড়ার দাম কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোরবানির আগেও ছাগলের চামড়ার দাম বেশি ছিল। ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। আসলে কোরবানির সময় অনভিজ্ঞ লোকদের দিয়ে চামড়া কাটানো হয়ে থাকে। এ জন্য চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। যার কারণে এমনটা হয়ে থাকে। তিনি বলেন, চলতি বছর ট্যানারিগুলো প্রায় ১ কোটির মতো চামড়া সংগ্রহ করতে পারবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।চামড়া খাতের সার্বিক পরিস্থিতি জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান দিলজাহান ভূঁইয়া বলেন, বিশ্বজুড়ে চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা কমে গেছে। কারণ বর্তমান বিশ্ব অর্থনৈতিকভাবে খুবই খারাপ পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া আর্টিফিশিয়াল লেদারের প্রভাবেও চামড়ার চাহিদা অনেকটা কমে গেছে। তিনি বলেন, আগে আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও চীনে চামড়া রপ্তানি করতাম। কিন্তু বর্তমানে আমাদের বড় বাজার শুধুমাত্র চীন। সেখানে ৯০ শতাংশ চামড়া রপ্তানি করা হয়। কিন্তু আগে আমাদের প্রধান চামড়া বাজার ছিল কোরিয়া। কোরিয়া আমাদের থেকে সরে গেছে। আমার যখন হাজারীবাগ থেকে হেমায়েতপুর যাই, তখনো অনেক বায়ার চলে গেছে। পরিবেশসম্মত উপায়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাত না হলে ইউরোপ, আমেরিকাসহ অন্যান্য দেশগুলো চামড়া কিনবে না। সেজন্য পরিবেশবান্ধব চামড়া শিল্পনগরী করে আন্তর্জাতিক সংগঠন লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ নিতে হবে। এই সনদ পেতে হলে আবার পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার (সিইটিপি) সনদ পেতে হবে। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে সেটা পাওয়া যাচ্ছে না। তারা বলছে, চামড়া শিল্পনগরের সিইটিপি এখনো পুরোপুরি কার্যকর করা যায়নি। ওদিকে  কেমিক্যালের লাইসেন্স নবায়ন করতে হলেও সিইটিপি সনদ দিতে হয়। তাছাড়া নবায়ন করা যায় না। এ জন্য  কেমিক্যাল আমদানি করতেও সমস্যায় পড়তে হয়। এতে চামড়া পচে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।  “>

ঈদের আগে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৭ টাকা বেশি নির্ধারণ করে দেয় সরকার। এতে চামড়ার দাম কিছুটা বাড়তি পাওয়ার আশা করছিলেন মৌসুমি ব্যবসায়ী এবং মাদ্রাসা ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষ। তবে শেষ পর্যন্ত সে আশায় গুড়ে বালি। গতবারের মতো এবারও তলানিতে চামড়ার দাম। এবার ছোট আকারের গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। মাঝারি আকারের চামড়া মানভেদে ৩০০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং বড় আকারের গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায়। অন্যদিকে ছোট আকারের গরু, খাসি ও বকরির চামড়া কিনতে অনীহা দেখাচ্ছেন আড়তদাররা। ছোট আকারের গরুর চামড়া ১০০ টাকা দিয়েও বিক্রি করতে হয়েছে। আর খাসি ও বকরির চামড়া ১০ টাকার বেশি বিক্রি হচ্ছে না।

চামড়ার দাম কম হওয়া প্রসঙ্গে ট্যানারি মালিক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম চামড়ার পণ্যের জয়জয়কার চলছে। এজন্য চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা অনেকটা কমে গেছে।

এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশি চামড়া কিনছে না। ফলে বাংলাদেশি চামড়ার মূল ক্রেতা এখন চীন। তারা দাম দেয় কম। চাইনিজ পণ্যগুলো পশুর চামড়ার পরিবর্তে আর্টিফিশিয়াল লেদার দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে। এতে তারা কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারে। এ জন্য দিনের পর দিন চামড়ার চাহিদা কমে আসছে। অন্যদিকে পোস্তার ব্যবসায়ীরা জানান, একেকটি গরুর চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে লবণ ও শ্রমিকের মজুরিসহ গড়ে ৩০০ টাকা খরচ করতে হয়। গত বছরের তুলনায় এবার লবণের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এতে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ করতে খরচ কিছুটা বেশি পড়ছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ) সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান মানবজমিনকে বলেন, দেশে অধিকাংশ পশুর চামড়া অনভিজ্ঞ মানুষদের দিয়ে কাটানো হয়। এতে অনেক চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। আমরা বার বার বলা সত্ত্বেও প্রতিবারই এমন সমস্যা দেখা যাচ্ছে। তারা যদি আইডিয়া করে ২৫ বর্গফুটের একটা চামড়া আমাদের এখানে নিয়ে আসে। কিন্তু এখানে আসলে সেটা ২০ থেকে ২১ বর্গফুট হয়ে যায়। কারণটা হলো অনভিজ্ঞতা। সেক্ষেত্রে যদি ৪ বর্গফুটের ঘাটতি হয়, তাহলে এখানেই তো ২০০ টাকা কমে যাচ্ছে। চোখের আইডিয়ার উপর কেনাকাটা করা হয়। ছাগলের চামড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চামড়ার বাজার নির্ভর করে আন্তর্জাতিক বাজারের উপরে। আন্তর্জাতিক বাজারে ছাগলের চামড়ার চাহিদা নেই। তাহলে এখানে আমাদের কি করার আছে। তিন বর্গফুটের ছাগলের চামড়া দিয়ে এখন আর কিছু হয় না। এই ফ্যাশনটা এখন আর নাই। তবে ৫ বর্গফুটের চামড়াগুলোর চাহিদা এখনো রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশি চামড়ার মূল ক্রেতা এখন চীন।

বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াতউল্লাহ বলেন, অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও চামড়ার ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মূল বিষয়টি হচ্ছে আমরা ব্যবসায়ীরা নিজেরা ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায় চামড়া কিনেছি। এ ছাড়া আমাদের জন্য যারা চামড়া সংগ্রহ করে তারাও কম দামে চামড়া ক্রয় করেনি। সরকার নির্ধারিত দামেই আমরা পশুর চামড়া কিনছি। তবে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা খুম কম দামে পশুর চামড়া সংগ্রহ করছে বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ছাগলের চামড়ার দাম কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোরবানির আগেও ছাগলের চামড়ার দাম বেশি ছিল। ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। আসলে কোরবানির সময় অনভিজ্ঞ লোকদের দিয়ে চামড়া কাটানো হয়ে থাকে। এ জন্য চামড়া নষ্ট হয়ে যায়। যার কারণে এমনটা হয়ে থাকে। তিনি বলেন, চলতি বছর ট্যানারিগুলো প্রায় ১ কোটির মতো চামড়া সংগ্রহ করতে পারবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।

চামড়া খাতের সার্বিক পরিস্থিতি জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান দিলজাহান ভূঁইয়া বলেন, বিশ্বজুড়ে চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা কমে গেছে। কারণ বর্তমান বিশ্ব অর্থনৈতিকভাবে খুবই খারাপ পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া আর্টিফিশিয়াল লেদারের প্রভাবেও চামড়ার চাহিদা অনেকটা কমে গেছে।

তিনি বলেন, আগে আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও চীনে চামড়া রপ্তানি করতাম। কিন্তু বর্তমানে আমাদের বড় বাজার শুধুমাত্র চীন। সেখানে ৯০ শতাংশ চামড়া রপ্তানি করা হয়। কিন্তু আগে আমাদের প্রধান চামড়া বাজার ছিল কোরিয়া। কোরিয়া আমাদের থেকে সরে গেছে। আমার যখন হাজারীবাগ থেকে হেমায়েতপুর যাই, তখনো অনেক বায়ার চলে গেছে। পরিবেশসম্মত উপায়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাত না হলে ইউরোপ, আমেরিকাসহ অন্যান্য দেশগুলো চামড়া কিনবে না। সেজন্য পরিবেশবান্ধব চামড়া শিল্পনগরী করে আন্তর্জাতিক সংগঠন লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ নিতে হবে। এই সনদ পেতে হলে আবার পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার (সিইটিপি) সনদ পেতে হবে। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে সেটা পাওয়া যাচ্ছে না। তারা বলছে, চামড়া শিল্পনগরের সিইটিপি এখনো পুরোপুরি কার্যকর করা যায়নি। ওদিকে  কেমিক্যালের লাইসেন্স নবায়ন করতে হলেও সিইটিপি সনদ দিতে হয়। তাছাড়া নবায়ন করা যায় না। এ জন্য  কেমিক্যাল আমদানি করতেও সমস্যায় পড়তে হয়। এতে চামড়া পচে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক ও সিইও: মামুনুর রশীদ নোমানী

ইমেইল: nomanibsl@gmail.com

মোবাইল: 01713799669 / 01712596354

 

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি।

© বিডি ২৪ নিউজ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

  বরিশালের ১৬টি আসনে বিএনপির প্রার্থী যারা   বরিশালে অপসাংবাদিকতা বন্ধে ঐক্যবদ্ধ ৩৫ সংগঠন   আটকে আছে ১৭শ কিলোমিটার সড়ক মেরামত ও উন্নয়ন কাজ   বরিশালের রাঙামাটি নদী থেকে হাত-পা বাঁধা যুবকের লাশ উদ্ধার   সারদা পুলিশ একাডেমি থেকে লাপাত্তা ডিআইজি এহসানউল্লাহ   বরিশালের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা ঘুস নিয়ে বদলীর অভিযোগ   বরিশালে ফরচুন মিজানের ভাই রবিউল আটক   দালাইলামা মডেলে হাসিনাকে নিয়ে নানা পরিকল্পনা দিল্লির   শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর বরিশালে বাস্তবায়ন করছে ৭শ’ কোটি টাকার প্রকল্প   বরিশালের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে বদলী বাণিজ্যের অভিযোগ   চলন্ত বিআরটিসি বাসে অগ্নিকাণ্ড,সব যাত্রী নিরাপদে   কাজ ফেলে পালিয়েছে মাফিয়া আমু’র ঘনিষ্ঠ ঠিকাদার   জেলের স্ত্রীকে ভয় দেখিয়ে হিজলা মৎস্য কর্মকর্তার ঘুষ গ্রহণ   বরগুনার কৃষি কর্মকর্তার অফিসই বাসা!   বরিশালে ভাই-ভাই দ্বন্দ্বে বড়ভাইকে মারধর   বাগেরহাটে বিএনপি নেতা ওয়াহিদুজ্জামান দিপুর নেতিবাচক কর্মকাণ্ড   অর্থ কেলেঙ্কারীতে আটক হওয়া সাইদুর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে   বাসের ধাক্কায় বিএনপি নেতা নাসিম আকন নিহত   বানারীপাড়ায় তিন বিএনপি নেতার নামে চাদাঁবাজী মামলা   গণপূর্তের কমিশন কিং প্রকৌশলী শাহ আলম ফারুক
Translate »