সোমবার ৩রা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ১৮ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ই-পেপার   সোমবার ৩রা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ


ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি ক্ষমতাসীনদের হাতিয়ার হিসেবে তুলে দেওয়া হয়েছে
প্রকাশ: ৪ এপ্রিল, ২০২৩, ৪:৫২ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি ক্ষমতাসীনদের হাতিয়ার হিসেবে তুলে দেওয়া হয়েছে

বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি যাঁরা ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাঁদের হাতিয়ার হিসেবে তুলে দেওয়া হয়েছে। যাঁরা সমালোচনা করেন, তাঁদের কণ্ঠ রোধ করতে এই আইন ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে সংখ্যালঘু ও সংবাদকর্মীরা সবচেয়ে বেশি নাজুক অবস্থায় পড়েছেন। এটি নিবর্তনমূলক, সংবিধানপরিপন্থী ও স্বাধীনতার চেতনার বিরোধী একটি আইন। সংস্কার করলেও এটিকে গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া কঠিন। তাই এটি বাতিল করতে হবে।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা ও দাবি তুলে ধরেন বিশিষ্ট নাগরিকেরা। ‘সংখ্যালঘু ও সংবাদকর্মী নির্যাতন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন সমন্বয় সেল ও উদ্বিগ্ন নাগরিকেরা।

সংবাদ সম্মেলন থেকে অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ অন্যান্য সম্পাদক, সংবাদকর্মী ও অন্যান্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারসহ সাত দফা দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তার নামে যে আইনটি হয়েছে, সেটি মানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার নামে নিরাপত্তাহীনতার সৃষ্টি করেছে। কাজেই এটিকে কোনোভাবেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বলা যাবে না, বরং এটিকে ডিজিটাল অনিরাপত্তামূলক আইন বলা যায়। এই অনিরাপত্তাটি প্রতিটি নাগরিকদের জন্যই।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যাঁরা ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সম্পৃক্ত, এই আইন তাঁদের হাতিয়ার হিসেবে তুলে দেওয়া হয়েছে। আবার আইন প্রয়োগকারী সংস্থা শেষ পর্যন্ত যাঁরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, অধিকার হরণের শিকার হয়েছেন, তাঁদের পাশে না দাঁড়িয়ে, তাঁদের সুরক্ষার দায়িত্ব না নিয়ে, যাঁরা অপরাধ করেছেন, অধিকার হরণ করেছেন, তাঁদের পক্ষে দাঁড়ায়।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে নিবর্তনমূলক, নির্যাতনমূলক, বৈষম্যমূলক, সংবিধানপরিপন্থী, স্বাধীনতার চেতনার বিরোধী আইন এবং জনগণের নিরাপত্তা হরণকারী আইন হিসেবে অবহিত করেন ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, যেকোনো মাপকাঠিতে এই আইন অগ্রহণযোগ্য। এটি যেভাবেই সংস্কার বা ঢেলে সাজানো হোক না কেন, এটিকে গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া খুবই কঠিন। তাই এটি বাতিল করা হোক।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে চূড়ান্তভাবে অপব্যবহার হয়েছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সাবেক সভাপতি কাজল দেবনাথ। তিনি বলেন, এই আইন সংখ্যালঘু নির্যাতনের জন্য বিশেষ আইন। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত এটি সংশোধন না হচ্ছে বা অন্তবর্তী ব্যবস্থা না নেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই আইন স্থগিত করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন নিজেরা করির সমন্বয়কারী ও অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের (এএলআরডি) চেয়ারপারসন খুশী কবির। তিনি বলেন, গণতন্ত্র চর্চায় আঘাত হানছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী তবারক হোসেইন বলেন, এ আইন দুটি শ্রেণিকে সবচেয়ে বেশি নাজুক অবস্থায় ফেলেছে। তারা হলো সাংবাদিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘আমরা মনে করি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের গ্রেপ্তার, হয়রানি ও ভীতিপ্রদর্শন এবং যাঁরা অনলাইনে সমালোচনা করেন, তাঁদের কণ্ঠ রোধ করতে ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের বরাত দিয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ক্ষমতাসীনদের ব্যক্তিগত হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। সাংবাদিক এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তরফ থেকে বিতর্কিত এই আইন বাতিলের দাবি আবার জোরেশোরে উঠেছে। তাঁরা বলছেন, এই আইন ‘কণ্ঠরোধের হাতিয়ার’ হয়ে উঠেছে এবং বিশেষ মহলের অপছন্দের ব্যক্তিদের নির্যাতন কিংবা শায়েস্তা করার সহজ অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সংবাদকর্মী শামসুজ্জামানের (সাভারে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক) ও নওগাঁয় সুলতানা জেসমিন নামের এক নারীর হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা তার জ্বলন্ত উদাহরণ।

এমন প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলসহ সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয় লিখিত বক্তব্যে। দাবির মধ্যে আরও রয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে যাঁদের নিপীড়ন করা হয়েছে বা যাঁরা নেহাত হয়রানির শিকার হয়ে জেলে আছেন, সেসব সংবাদকর্মী, সংখ্যালঘু ও অন্যান্য ব্যক্তিদের অবিলম্বে মুক্তি ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া, নওগাঁয় ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিনের র‌্যাবের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মৃত্যুর বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের নামে যখন–তখন কাউকে গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা যাবে না ইত্যাদি।




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক ও সিইও: মামুনুর রশীদ নোমানী

ইমেইল: nomanibsl@gmail.com

মোবাইল: 01713799669 / 01712596354

 

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি।

© বিডি ২৪ নিউজ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

  আটকে আছে ১৭শ কিলোমিটার সড়ক মেরামত ও উন্নয়ন কাজ   বরিশালের রাঙামাটি নদী থেকে হাত-পা বাঁধা যুবকের লাশ উদ্ধার   সারদা পুলিশ একাডেমি থেকে লাপাত্তা ডিআইজি এহসানউল্লাহ   বরিশালের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা ঘুস নিয়ে বদলীর অভিযোগ   বরিশালে ফরচুন মিজানের ভাই রবিউল আটক   দালাইলামা মডেলে হাসিনাকে নিয়ে নানা পরিকল্পনা দিল্লির   শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর বরিশালে বাস্তবায়ন করছে ৭শ’ কোটি টাকার প্রকল্প   বরিশালের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে বদলী বাণিজ্যের অভিযোগ   চলন্ত বিআরটিসি বাসে অগ্নিকাণ্ড,সব যাত্রী নিরাপদে   কাজ ফেলে পালিয়েছে মাফিয়া আমু’র ঘনিষ্ঠ ঠিকাদার   জেলের স্ত্রীকে ভয় দেখিয়ে হিজলা মৎস্য কর্মকর্তার ঘুষ গ্রহণ   বরগুনার কৃষি কর্মকর্তার অফিসই বাসা!   বরিশালে ভাই-ভাই দ্বন্দ্বে বড়ভাইকে মারধর   বাগেরহাটে বিএনপি নেতা ওয়াহিদুজ্জামান দিপুর নেতিবাচক কর্মকাণ্ড   অর্থ কেলেঙ্কারীতে আটক হওয়া সাইদুর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে   বাসের ধাক্কায় বিএনপি নেতা নাসিম আকন নিহত   বানারীপাড়ায় তিন বিএনপি নেতার নামে চাদাঁবাজী মামলা   গণপূর্তের কমিশন কিং প্রকৌশলী শাহ আলম ফারুক   ঢাকা থেকে বরিশাল রুটে পি এস মাহসুদ চলবে প্রতি শুক্রবার   চট্টগ্রামের মাফিয়া ডন পাপ্পীর যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ভিসা বাতিলের আবেদন
Translate »