
বিডি ২৪ নিউজ অনলাইন: বরগুনা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে সরকারি অফিসকে ব্যক্তিগত বাসাবাড়ি বানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে ব্যাপক সমালোচনা ও প্রশাসনিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের কোনো সরকারি কোয়ার্টার বরাদ্দ নেই। তাদেরকে মূল বেতনের ১৬ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া প্রদান করা হয়। তবু অফিসে বসবাসের কোনো অনুমতি নেই। কিন্তু এসব নিয়ম অমান্য করে বরগুনা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান নিজ অফিসের তৃতীয় তলার একটি রুমে বাসা বানিয়ে থাকছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অফিস সূত্রে জানা যায়, কর্মকর্তাটি যোগদানের পর থেকেই ডেভেলপমেন্ট সেকশনের একটি রুম দখল করে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। স্থানীয়ভাবে অভিযোগ রয়েছে, অফিসের ভেতরে বসবাসের পাশাপাশি তিনি নানান অনৈতিক কর্মকাণ্ডেও জড়িত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা—কর্মচারী জানান,“বিগত দিনে বরগুনা সদরে যত কৃষি কর্মকর্তা ছিলেন, কেউই অফিসে থাকেননি। সবাই বাইরে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। কিন্তু বর্তমান কর্মকর্তা যোগদানের পর থেকেই অফিসের একটি রুম দখল করে সেখানে থাকছেন। আমরা কিছু বলতে পারি না, কারণ তিনি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।”
তারা আরও জানান, যোগদানের পরপরই তিনি ১৬ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি করেন। এতে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) তাকে শোকজ করেন। কিন্তু সেই শোকজের কপি তিনি নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে প্রকাশ করেন। এ ঘটনায় তাকে দ্বিতীয়বারের মতোও শোকজ করা হয়। পরবর্তীতে ডিডি ঐ বদলি আদেশ স্থগিত করে উপসহকারী কর্মকর্তাদের স্বপদে বহাল রাখেন।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা ফার্টিলাইজার সভাপতি মো. শাহিন মোল্লা বলেন,“দুই মাস আগে অফিস সময়ে আমি কৃষি অফিসে গিয়ে দেখি, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শর্টপ্যান্ট পরে অফিসে আছেন এবং ধূমপান করছেন। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম, তিনি অন্য কেউ। পরে জানতে পারি, তিনি নিজেই কৃষি কর্মকর্তা। একজন বিসিএস কর্মকর্তার এমন আচরণ অত্যন্ত অনভিপ্রেত। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদন্ত করা উচিত।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,“আমি বরগুনায় যোগদানের পর থেকেই অফিসে থাকি। ছুটি পেলেই পটুয়াখালী চলে যাই।”
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) রথীন্দ্র নাথ বিশ্বাস জানান,“আমি জানতাম না তিনি অফিসে থেকেই থাকেন। অফিসে থাকার কোনো বিধান নেই। সরকার প্রতি মাসে কর্মকর্তাদের বাড়িভাড়া বাবদ ভাতা দেয়। এটি স্পষ্টতই নিয়মবহির্ভূত কাজ। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।