ভোলায় আদালতের ড্রাইভার আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ
প্রকাশ: ১ অক্টোবর, ২০২৫, ২:৩৯ পূর্বাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
অনলাইননিউজ: ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে জমি দখল ও উচ্ছেদের হুমকিসহ দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ভোলা জেলা জজ আদালতের ড্রাইভার আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে।
অভিযোগে জানা যায়, গুপ্তমুন্সি গ্রামের বাসিন্দা মৃত মো. হাফিজুর রহমানের স্ত্রী মোসাম্মৎ জুলিয়া আক্তার স্বামীর মৃত্যুর পর (তারিখ: ৯ মার্চ ২০২০) দুই নাবালক সন্তান নিয়ে স্বামীর খরিদা ৮ শতাংশ জমিতে জরাজীর্ণ দোচালা টিনের ঘরে বসবাস করছেন। তিনি জানান, অসহায় অবস্থার সুযোগ নিয়ে আলাউদ্দিন তার শ্বশুর-শাশুড়িকে সঙ্গে নিয়ে ওই জমি ও বসতবাড়ি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এমনকি ঘর মেরামত করতেও বাধা দিচ্ছেন। বর্ষা মৌসুমে দুই এতিম সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
জুলিয়া আক্তার দাবি করেন, আলাউদ্দিন বর্তমানে তার কাছে ৭ লাখ টাকা দাবি করেছেন। টাকা না দিলে তাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে জমি দখলের হুমকি দিচ্ছেন। একই সঙ্গে তার কিশোরী কন্যাকে ঘিরে তিনি আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে ভোলা জেলা জজ আদালতের ড্রাইভার পদে যোগদানের পর আলাউদ্দিন নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। ২০২১ সালের জজ কোর্টের নিয়োগ বাণিজ্যসহ অসংখ্য দুর্নীতি ও মামলার দালালির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এছাড়া, জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি আইডি নং ৫৯৫৭৮৯১৬৯-এ জন্ম তারিখ ১৮/১১/১৯৯০ দেখিয়ে চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু তার প্রকৃত জন্ম তারিখ ১৮/১১/১৯৮৪, যার আইডি নং ০৯১৮০১২১৭৬৬১১। তার ভাই-বোনদের পরিচয়পত্রেও অসঙ্গতি রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ—ছোট বোন ফাতেমা আক্তারের জন্ম তারিখ ১২/০১/১৯৯০
ছোট ভাই সালাউদ্দিনের জন্ম তারিখ ১২/০৭/১৯৯০, আইডি নং ২৮২৫৮৭০৭৩২ এতে একাধিক ভাইবোনের জন্মসন ১৯৯০ হওয়া জালিয়াতির প্রমাণ হিসেবে ধরা হচ্ছে।
মাত্র সাত বছরের চাকরিজীবনে আলাউদ্দিন ভোলা শহরের এলাকায় একটি ভবনের প্লাট কিনে বসবাস করার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি নামে-বেনামে বিপুল সম্পদ ও নগদ অর্থের মালিক বলে গেছেন। এরই মধ্যে কয়েকটি দৈনিকে তার দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হয়েছে।
এলাকাবাসীর দাবি, আলাউদ্দিন বিচারকদের গাড়ি চালকের পদকে ব্যবহার করে প্রভাব খাটান । তার বিরুদ্ধে কিছু বললেই হুমকি-ধমকি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানি করা হয়। ফলে এলাকায় তিনি আতঙ্কের প্রতীকে পরিণত হয়েছেন।
মোসাম্মৎ জুলিয়া আক্তার বলেন, আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর দুই এতিম সন্তান নিয়ে এই ঘরে কষ্টে বসবাস করছি। অথচ আলাউদ্দিন আমাকে ঘর থেকে উৎখাত করতে চাইছে। সে ৭ লাখ টাকা চেয়ে না দিলে জমি দখল করার হুমকি দিয়েছে আমি প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার চাই।
ভুক্তভোগী নারী জরুরি ভিত্তিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত আলাউদ্দিন ক্যামেরার সামনে বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেন।