রাশিয়া-আফগানিস্তান সরাসরি বৈঠক: দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও ‘বিদেশি ঘাঁটি’ নিয়ে কড়া বার্তা
প্রকাশ: ৮ অক্টোবর, ২০২৫, ২:৫৪ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
অনলাইননিউজ: সম্প্রতি তালেবান সরকারকে রাশিয়ার স্বীকৃতির পর প্রথমবারের মতো সরাসরি বৈঠকে বসলো দুই দেশ। আলোচনায় অংশ নেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এবং তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। এই বৈঠক শুধু দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার নয়, আফগান ভূখণ্ডে বিদেশি সামরিক ঘাঁটির ভবিষ্যৎ নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ আফগানিস্তানে মাদক চোরাচালান, সন্ত্রাসবাদ এবং সংগঠিত অপরাধ দমনে মস্কোর পক্ষ থেকে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, আফগান জনগণের জন্য শান্তিপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করতে রাশিয়া সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত। জবাবে, তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফগান আমিরাতকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ায় মস্কোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বৈঠকের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিক ছিল সামরিক উপস্থিতি নিয়ে তালেবানের স্পষ্ট অবস্থান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দেন, কোনো পরিস্থিতিতেই আফগানিস্তানের মাটিতে বিদেশি সামরিক ঘাঁটি অনুমোদন করা হবে না। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পরিত্যক্ত বাগরাম বিমান ঘাঁটিও অন্তর্ভুক্ত।
তালেবানের এই অবস্থানকে সমর্থন জানিয়ে রাশিয়ার বিশেষ দূত জামির কাবুলভ নিশ্চিত করেন যে, আফগানিস্তানে ঘাঁটি স্থাপনের কোনো পরিকল্পনা মস্কোর নেই। বিদেশি সামরিক উপস্থিতির প্রশ্নে দুই দেশের এই অভিন্ন অবস্থান আন্তর্জাতিক মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এদিকে, একই সময়ে রাশিয়া, চীন, ইরান এবং পাকিস্তান আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য সন্ত্রাসমুক্ত আফগানিস্তানকে অত্যাবশ্যক উল্লেখ করে আলাদা একটি বৈঠক করে। পাকিস্তানের বিশেষ দূত জানান, সন্ত্রাস দমনে সব দেশ মিলে সমন্বিত পদক্ষেপ নেবে। বৈঠকে আফগানিস্তানের মানবিক সংকট নিরসনের বিষয়টিও প্রাধান্য পায়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বৈঠকটি ভূ-রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস পুনরায় খোলার সম্ভাবনা নিয়ে গুঞ্জন রয়েছে, তবে বিদেশি সামরিক উপস্থিতি না দেওয়ার ইস্যুতে রাশিয়া ও তালেবানের এই একজোট হওয়া অঞ্চলে এক নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা তৈরি করেছে।