আবু হানিফ, বাগেরহাট অফিসঃ
করোনার প্রভাবে বাগেরহাটে দেশের সাদা সোনা খ্যাত গলদা বাগদা চিংড়ির দাম মারাত্মক কম হওয়ায় বাগেরহাটের ফকিরহাটে চিংড়ি চাষ এক প্রকার মরার উপর খারার ঘাঁ।
উৎপাদন খরচ না উঠায় ফকিরহাটের অধিকাংশ চিংড়ি চাষীরা হতাশায় ভুগছে। এভাবে চলতে থাকলে এ রপ্তানী খাতটি বন্ধের উপক্রম হবে বলে উপজেলার চিংড়ি চাষীরা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ৮০’র দশক থেকে দক্ষিনাঞ্চলে ধান চাষের পাশাপাশি চিংড়ি চাষ শুরু হয়। যার থেকে সরকার বছরে আয় করছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। কিন্ত করোনার প্রভাবের কারণে চিংড়ীর দাম মারাত্মকভাবে কম হওয়ায় খাতটি হুমকির মুখে পড়েছে।
কয়েক বছর পূর্বে চিংড়ির দাম গ্রেড হিসেবে বাজার দাম ছিল কেজি প্রতি ২০ গ্রেড ১২-১৪’শ টাকা। কিন্ত করোনার প্রভাবের কারণে দাম কমে চলে এসেছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। জেলার ফকিরহাট উপজেলার মৎস্য চাষীদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, করোনার কারণে আমরা চরম খারাপ অবস্থায় আছি। আমরা লোন নিয়ে চাষ করেছি।
এনজিও থেকে কিস্তির জন্য চাপ দিচ্ছে, এদিকে মাছের কোন দাম নাই। সার, রেণূ পোনা সহ যাবতীয় খরচ উঠাতেই কষ্ট হচ্ছে। সরকার যদি আমাদের সহযোগিতা করে তবে পরিবার, পরিজন নিয়ে দুবেলা দুমূঠো খেয়ে বাচতে পারবো।
তাছাড়া কিছুদিন আগে ঘুর্ণিঝড় আম্পানের কারণে ঘের ভেড়ি ঢুবে গেছে যার কারণে চাষের মাছ সব বের হয়ে গেছে। সরকার আমাদের যদি সহযোগিতা না করে তবে পরিবার পরিজন নিয়ে রাস্তায় নামা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা।
শুধু চিংড়ী খাত নয়, হিমায়িত মৎস্য চাষীদের ও একই অবস্থা। যে মাছের মণ আগে ১৪-১৫ হাজার টাকা ছিল সেই মাছ ৫-৬ হাজার টাকা মণ বিক্রয় করতেই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উপজেলার সব থেকে বড় মৎস্য আড়ৎ ফলতিতা বাজার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গিয়েছে,ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছে বিশাল এই মৎস্য আড়ৎ।
এ বিষয়ে ফকিরহাট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অভিজিৎ শীল এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন,করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে চিংড়ী ও হিমায়িত মৎস্য চাষীরা দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে,আমরা ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের নাম সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ইতিমধ্যে প্রেরণ করেছি।
দেশের রাজস্ব খাতে অতুলনীয় ভুমিকা রাখা এই মৎস্য খাত-কে আরো সমৃদ্ধিশীল করতে প্রয়োজন সরকারের সহযোগিতা আর তার পাশাপাশি সহজ ঋণের ব্যবস্থা করা। তাতে রক্ষা পাবে এই চিংড়ী খাতটি।