October 7, 2024, 1:39 pm
শিরোনাম:
মনোহরদীতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন মনোহরদীতে দিনব্যাপী পাট চাষী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত মনোহরদীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে বেধরক মারধরের অভিযোগ মনোহরদীতে জনমত জরিপ ও প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদ সরকার মনোহরদীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী “আলোকিত গোতাশিয়া” ফেসবুক গ্রুপের পক্ষহতে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে অসহায়দের মাঝে শিল্পমন্ত্রীর ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে খননযন্ত্র ও বালুর স্তুপ জব্দ এতিম শিশুদের নিয়ে ইফতার করলেন মনোহরদীর ইউএনও হাছিবা খান ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে বিজয়ী মনোহরদীর সন্তান এ্যাড.কাজী হুমায়ুন কবীর

মাধবপুরে পাখি শিকার বন্ধে সচেতন হওয়া জরুরী।

লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
  • আপডেটের সময় : শনিবার, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২০
  • 304 দেখুন

হবিগঞ্জের মাধবপুরে পাখি শিকার বন্ধে সচেতন হওয়া জরুরী। গত কয়েকদিন ধরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে বেশ কিছু স্থানে বিশেষ করে উপজেলার গ্যাস ফিল্ডে পাখির নিরাপদ আশ্রয়ে হানা দিয়ে পাখি নিধনের খবর পাওয়া গেছে।

প্রতিদিন প্রভাতে ও সন্ধ্যায় যখন পাখিরা তাদের বাসস্থানে যায় তখন গুলি, গোলাইল, ছিট, ঢিল দিয়ে মা পাখি সহ তাদের ছানা বাচ্ছারাও তাদের হাত থেকে রেহাই পায় না। শীতে অতিথি পাখিরা আসে হিমেল সমুদ্র পাড়ি দিয়ে। অপেক্ষাকৃত উষ্ণ আবহাওয়ায় সুখ অনুভব করতে, হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে, দলবেঁধে পাখিরা আসে রৌদ্রোজ্জ্বল পরিবেশ আর ঠান্ডা রোদের মিশেল আবহাওয়ার দেশ বাংলাদেশে।
শীত মৌসুমে পাখিরা এ দেশে আসে খাবার আর নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানেও। কারণ, এ সময় সাইবেরিয়াসহ অন্যান্য শীতপ্রধান দেশের তীব্র শীতে পাখিদের পক্ষে বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে ওঠে। শুধু তাই নয়, তখন তীব্রভাবে খাদ্য সংকটও দেখা দেয়। প্রতিবছরের মতো এ বছরও শীতের শুরুতে সুদূর হিমালয়, সাইবেরিয়াসহ শীতপ্রধান অঞ্চল থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি আমাদের দেশে আসছে।পাখি শিকার বন্ধে
নভেম্বরের শুরু থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে অসংখ্য অতিথি পাখি আমাদের দেশে আসতে আরম্ভ করে। পাখিদের আগমনে বিল-ঝিলগুলো মুখর হয়ে ওঠে। পাখির কিচিরমিচির শব্দে আনন্দঘন পরিবেশকে করে তোলে আরো প্রাণবান্ধব। আবার শীতের তীব্রতা কিছুটা কমে গেলে তারা ফিরে যায়। এদের মধ্যে ডাহুক, তীরশুল, নলকাক, ভাড়ই, রাংগাবনী, গাংচিল, রাতচড়া, হুটটিটি, হারগিলা, বালিহাঁস, জলপিপি, কোম্বডাক, সরালি কাস্তে, চাড়া, পাতাড়ি হাঁস, কাদাখোচা, হুরহুর, খয়রা, সোনা রিজিয়া অন্যতম। যেগুলোর মধ্যে অনেক প্রজাতিই বিলুপ্তির পথে।
কিন্তু, রাতের অন্ধকারে কিছু অসাধু চোরাকারবারী ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করে। পাখি শিকারিদের হাত থেকে অতিথি পাখিদের রক্ষা করার জন্য এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজন, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সচেতন হওয়া দরকার। কারণ, সচেতনতা ছাড়া কোনোভাবেই পাখি শিকার বন্ধ করা যাবে না। অতিথি পাখি কিন্তু অতিথিদের মতোই। এরা আমাদের মেহমানদের মতো। শীত শেষ হলেই এরা চলে যায় বা অনেক প্রজাতির পাখি আমাদের দেশে থেকে যায়। এরা আমাদের সম্পদ। অতিথি পাখির আগমনে দেশের নদ-নদীর সৌন্দর্যকে বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু আমরা এই অতিথিদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করছি। এদেরকে শিকার করছি।
আমাদের আহারের খাদ্য বানাচ্ছি। কিন্তু, কারা অতিথি পাখি শিকার করে? অধিকাংশ সময় দেখা যায়, শৌখিন ও পেশাদার পাখি শিকারিরা বন্দুক, বিষটোপ, জাল ও বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ পেতে পাখি শিকার শুরু করে। অনেকে আবার শীতের সময় পাখি শিকারকে পেশা হিসেবে নিয়ে নেয়। পেশা হিসেবে যারা নেয়, এটাই হচ্ছে অতিথি পাখিদের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয়। এই পেশাদার শিকারিরা রাতদিন দৌড়ায় অতিথি পাখি ধরার পেছনে। যার ফলে অতিথি পাখিরা নিরাপদে কোথায়ও থাকতে পারে না। ১৯৭৪ সালে বন্যপ্রাণী রক্ষা আইন ও ২০১২ সালে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে বলা হয়েছে, পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর জেল, এক লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে হবে। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে অপরাধীর দুই বছরের জেল, দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে।”
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বাস্তবে এ আইনের কোনো প্রয়োগ দেখা যায় না। যদি প্রয়োগ হতো, তাহলে এ রকমভাবে অতিথি পাখি শিকার হতো না। দেশের বেশ কিছু জায়গাকে এ সময়ে এরা বেছে নেয় নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে। তখন এই জায়গাগুলো অতিথি পাখির র্র্স্বগরাজ্যে পরিণত হয়। এসব জায়গায় এদের নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের। আমার দেশের সবার। একটা পাখির মাংস কতটুকুই বা ১০০-২০০ গ্রাম, হবে হয়তো। এই মাংসের একটু স্বাদ নেওয়ার জন্য তাদের নিধন করবেন! বন্দুক দিয়ে, ফাঁদ পেতে তাদের শিকার করেন? কিন্তু একটু চিন্তা করুণ তো, প্রাকৃতিক পরিবেশের কত বড় ক্ষতিটা না আপনি করে ফেলছেন। এমনও হতে পারে, একটি পাখির একটি প্রজাতিও ধ্বংস করে ফেলতে পারেন। এই ভয়ংকর কাজটি আপনি একজন মানুষ হয়ে সামান্য লোভে পড়ে করে ফেলবেন কেন? কিন্তু একটি প্রজাতি ধ্বংসের মুখে পড়ছে, সেটা নিয়ে ভাববেন না? বাজারে পাখির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কোনোভাবে ধরতে পারলেই বিক্রি করতে সমস্যা হয় না।
প্রতি জোড়া সাদা বক ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, চখাচখি ৮০ থেকে ১০০ ও বালিহাঁস ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়। ফলে বেশি লাভের আসায় অনেকে মাছ ধরা বাদ দিয়ে পাখি শিকার করছেন। এসব পাখি শিকার বন্ধের জন্য পরিবেশবাদী পাখি সংরক্ষণ সংগঠনগুলোকে পাখি শিকারের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। যে যে এলাকায় অতিথি পাখি আসে, সে এলাকায় অতিথি পাখি নিধন সম্বন্ধে বিভিন্ন সভা করা যেতে পারে। অতিথি পাখি শিকার বন্ধে প্রচারণা চালানো যেতে পারে। এলাকায় যারা পাখি শিকার করে, তাদের নামের তালিকা প্রস্তুত করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে দিলে তারা এ ব্যাপারে সহযোগিতা করতে পারে।
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, সাধারণ জনগণের সচেতনতাই বন্ধ করতে পারে অতিথি পাখি শিকার। এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আবুল হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পাখি নিধন অপরাধমূলক কাজ। যদি কেউ পাখি শিকার বা নিধন করে তাহলে আইনের আওতায় এনে দন্ডনীয় করা হবে। মাধবপুর গ্যাস ফিল্ড সুপার ভাইজার আব্দুল কুদ্দুস (অবঃ) বলেন, এখানে পাখিরা নিরাপদ আশ্রয় বেছে নিয়েছে। কিন্তু কিছু পাখি শিকারকারী প্রশাসনের চোখ পাখি দিয়ে মা পাখি সহ বাচ্ছাদের নিধন করছে। তাই পরিবেশ ও প্রকৃতি সৌন্দর্য রক্ষা করতে পাখিগুলো যাতে নিধন না করে সেজন্য তিনি প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর

https://bd24news.com © All rights reserved © 2022

Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102