ময়মনসিংহের নান্দাইলে ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বক্তব্য ফেসবুক লাইভে প্রচার করে কথিত সাংবাদিক। ধর্ষণের শিকার হয়ে বিয়ের দাবিতে অভিযুক্তের বাড়িতে অবস্থান নেয় কিশোরী। এমন খবর পেয়ে ওই বাড়িতে যান একটি অনলাইন টিভি ও পত্রিকার পরিচয়ে দুই সাংবাদিক। তারা ফেসবুক লাইভে ওই কিশোরীর লাইভ সাক্ষাৎকার নেন। এ ঘটনায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা। বুধবার নান্দাইল উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। ওইদিন সারোয়ার জাহান জনি’ নামের এক সাংবাদিকের ফেসবুক আইডিতে এই লাইভ প্রচার করা হয়।
অভিযুক্ত দুজন হলেন- এশিয়ান বার্তা টিভি ক্রাইম রিপোর্টার সারোয়ার জাহান জনি ও আজকের আলোকিত সকাল পত্রিকার ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি লোকমান হাকিম।
জানা যায়, উপজেলার একটি ইউনিয়নের বাসিন্দা নুরুদ্দিনের ছেলে সোলায়মান প্রতিবেশী ওই কিশোরীকে প্রলোভনে ধর্ষণ করে। বুধবার সকাল থেকে ওই কিশোরী সোলায়মানের বাড়ির সামনে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেয়। রাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল বারেক কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে সেখানে যান। মিমাংসার নামে তারা ওই কিশোরীকে অবস্থান থেকে সরিয়ে নিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি বাড়িতে রেখে যান।
এদিকে বিয়ের দাবিতে অবস্থানকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এশিয়ান বার্তা টিভি ও আজকের আলোকিত সকাল পত্রিকার ওই দুই সাংবাদিক। এক পর্যায়ে তারা ওই কিশোরীকে ফেসবুক লাইভে এনে সাক্ষাৎকার নেন। এ সময় কারা কিশোরীর কাছে তাকে কে কে তাকে ধর্ষণ করছে, কিভাবে কি ঘটনা ঘটলো, আসল ঘটনাটি কি সহ বিভিন্ন বিব্রতকর প্রশ্ন করেন।
প্রায় ৬ মিনিট ৫২ সেকেন্ডের এই লাইভে কিশোরী সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তার পেছন স্থানীয়রা ভিড় করে।
কিশোরীর দাবি- স্থানীয় ইউপি সদস্য বারেক, আলা ডাক্তার ও উজ্জলসহ কয়েকজন নেতা তাকে ওই বাড়িতে রেখে গেছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল বারেক বলেন, ‘আমি তো তারে (কিশোরী) বিয়ের জন্য এখানে এনেছি। এতে আমার কি দোষ। ছেড়িতো আরো অনেকের কথা কয়।’
ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরির ভিডিও ধারণ ও প্রকাশকারী সারোয়ার জাহান জনি বলেন, ‘আমরার কোনো দোষ নাই। কিশোরীর পরিবারের জোরাজুরিতে করতে হয়েছে।
অপর সাংবাদিব লোকমান হাকিম বলেন, আমি সাক্ষাৎকার নিলেও প্রচার করেছে জনির আইডি থেকে।
এ ব্যাপারে নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এরশাদ উদ্দিন বলেন, ভিডিওটি আমি দেখেছি। যা অত্যন্ত খারাপ হয়েছে। এটা কখনো করতে পারে না। এ বিষয়ে থানাকে অবহিত করা হয়েছে।
নান্দাইল থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, উচ্চ আদালতের সম্পূর্ণ নির্দেশ রয়েছে নির্যাতিতার ছবি তো দূরের কথা নাম ঠিকানাও প্রকাশ করা যাবে না। এ ব্যাপারে ভিডিওটি দেখে তদন্ত করে ব্যবস্থা-নেওয়া হবে।