এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ের হিড়িক লেগেছে। প্রথম ধাপে ৩৭১টি ইউপির মধ্যে ৭৩টিতে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। এ ৭৩টি ইউপির মধ্যে ৪০টিই বাগেরহাটের।
এ ছাড়া ৬৮ জন সাধারণ সদস্য ও আটজন সংরক্ষিত সদস্য বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। সব মিলে এবারে ইউপি প্রথম ধাপের নির্বাচনে তিন পদে ১৪৯ জন জনপ্রতিনিধি বিনা ভোটে নির্বাচিত হলেন।
তবে অনেক ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী এবং অন্যান্য দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে।
ইসি জানিয়েছে, এ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমার সময় ৩১ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী ছিল। পরে বাছাই ও প্রত্যাহার শেষ একক প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৩ ইউপিতে। একই সঙ্গে তিন পদে এ নির্বাচন থেকে মনোনয়পত্র প্রত্যাহার করেছেন ১ হাজার ৮০ জন। বর্তমানে ভোটের মাঠে রয়েছেন ১৯ হাজার ১৩৭ জন।
চেয়ারম্যান, সংরক্ষিত সদস্য এবং সদস্য পদে মোট ২০ হাজার ৪৮৪ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাহারের পর চেয়ারম্যান পদে ১ হাজার ৪২৯ জন, মেম্বার পদে ১৩ হাজার ৫২৮ জন এবং সংরক্ষিত মেম্বার পদে ৪ হাজার ১৮০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন। গতকাল বৈধ প্রার্থীদের মাঝে রিটার্নিং অফিসাররা প্রতীক বরাদ্দ করেছেন।
প্রতীক পাওয়ার পর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা। এ ছাড়া ৭৩ ইউপিতে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থীদের বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। ২৫ মার্চ কমিশন সেই তালিকা প্রকাশ করেছে।
তালিকায় দেখা গেছে, সব চেয়ে বেশি চেয়ারম্যান বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন বাগেরহাট জেলায়। এ জেলায় আওয়ামী লীগের ৪০ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া পটুয়াখালীতে দুজন, বরিশালে ১৪ জন, পিরোজপুরে চারজন, ভোলায় সাতজন, গাজীপুরে দুজন এবং চট্টগ্রামে চারজন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে দ্বিতীয়বারের মতো দলীয় প্রতীকে ভোট হচ্ছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি এবার ইউপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। প্রথম ধাপে ৩৭১টি ইউপিতে ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১১ এপ্রিল।
প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ৭৩টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ভোট নেওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না। এ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহীরা গত ১৮ মার্চ পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন; ১৯ মার্চ বাছাই হয়। গত ২৪ মার্চ ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন।
ইসি সচিবালয় সূত্র জানায়, মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন ৩১টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী ছিল। গত বুধবার ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময়। চেয়ারম্যান পদে ২৮১ জন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। মনোননয়নপত্র প্রত্যাহারের পর মোট ৭৩টি ইউপিতে প্রার্থী আছেন একজন করে। অর্থাৎ তারা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে ৪ হাজার ১০৪টি ইউপির মধ্যে ২০৭টিতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। সে হিসাবে গতবার ৫ শতাংশ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ভোটের প্রয়োজন হয়নি।-বাংলাদেশ প্রতিদিন।