হবিগঞ্জের মাধবপুরে ২০০ দুগ্ধ খামারি দুধ বিক্রি করতে পারছেন না চলতি লকডাউনে বিপাকে পড়া অনেক খামারি এখন গ্রামে গ্রামে দুধ ফেরি করছেন
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার আন্দিউড়া গ্রামে, গ্রামে ফেরি করে দুধ বিক্রি করছেন দুই ব্যক্তি। কথা হয় তাঁদের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, হাটে দুধ বিক্রি হয়নি, তাই হেঁটে হেঁটে দুধ বিক্রি করছি কথা হয় ওই গ্রামের পিওর অ্যান্ড অর্গানিক ডেইরি ফার্মের মালিক মোত্তাকিন চৌধুরীর সঙ্গে তিনি বলেন, চাকরি ছেড়ে গ্রামে গরুর খামার করে উদ্যোক্তা হয়েছিলেন তিনি তাঁর খামারে কর্মসংস্থান হয়েছে ২০ জন বেকার যুবকের, প্রতি মাসে আয় ছিল লাখ টাকার ওপরে কিন্তু লাভের বদলে এখন প্রতি মাসে লাখ টাকার ক্ষতি গুনতে হচ্ছে তাঁকে।
শুধু মোত্তাকিন নন তাঁর মতো উপজেলার দুই শতাধিক খামারি করোনায় সংকটে পড়েছেন খামারিরা বলেন চলমান কঠোর লকডাউনে মিষ্টির দোকান বন্ধ চলে না যানবাহন এ অবস্থায় দুধ বিক্রি করা যাচ্ছে না, এ ছাড়া দাম বেড়েছে গোখাদ্যের এখন তাঁদের লাভের চেয়ে লোকসানই গুনতে হচ্ছে বেশি মোত্তাকিন চৌধুরী বলেন, লকডাউনে মিষ্টির দোকান বন্ধ হাটে যাচ্ছে না যানবাহন কোনো যানবাহনে দুধ পাঠানো হলে প্রশাসন আটকে রাখে, এতে দুধ নষ্ট হয় প্রতিদিন আমার খামারে ৪০০ লিটার দুধ হয়। এত দুধ নিয়ে বিপাকে আছি তাই ফেলে দেওয়ার চেয়ে বাড়ি বাড়ি হেঁটে অল্প দামে দুধ বিক্রি করতে হয় এদিকে বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে গোখাদ্যের দাম উপজেলার দুর্গাপুর
গ্রামের জগন্নাথ ডেইরি ফার্মের মালিক কৃপা কান্ত সরকার বলেন, গোখাদ্যের দাম এখন বেশি। দুধ বিক্রি করতে না পারলে খাদ্য কেনা মুশকিল। তাই প্রতিদিন মানুষকে হাতে-পায়ে ধরে ১৫-২০ টাকা লিটার দরে বিক্রি করে দিই অথচ আগে প্রতি লিটার দুধ গড়ে ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হতো কড়রা গ্রামের এন আর অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক এ এস এম রাব্বি বলেন, কঠোর লকডাউনে দুধ বিক্রি প্রায় বন্ধ আশপাশের মানুষকে বিনা মূল্যে দুধ দিয়ে দিতে হচ্ছে। গোখাদ্য কেনা, বিদ্যুৎবিল, শ্রমিকের মজুরিসহ নানা খরচে এখন দিশেহারা আমাদের খামার রক্ষা করাই মুশকিল প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে বলা হয়েছিল প্রণোদনা দেবে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কিছুই পাইনি দুধ না বেচতে পারলে ঋণের ঝুলি লম্বা হবে ফার্মে গরু রয়েছে ৯৪টি।
এর মধ্যে দুধের গাভি রয়েছে ১৮টি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চিকিৎসক মোহাম্মদ মিলন মিয়া বলেন মাধবপুরে নিবন্ধনকৃত ১২টি খামার রয়েছে এ ছাড়া নিবন্ধনের বাইরেও ছোট-বড় আরও প্রায় ২০০ খামার রয়েছে তারা মূলত মিষ্টির দোকান গুলোয় দুধ বিক্রি করে লকডাউনে মিষ্টির দোকান গুলোর বেশির ভাগ বন্ধ, এতে খামারিরা বিপাকে পড়েছেন প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে একটি নির্দেশনা এসেছে লকডাউনে মৎস্য ও প্রাণিজাত খাদ্য এবং এ খাতে উৎপাদনে ব্যবহৃত সামগ্রী পরিবহন সরবরাহ এবং বিপণন অব্যাহত থাকবে নির্দেশনা মোতাবেক মিষ্টির দোকান খোলা থাকতে পারে আমি দোকান গুলোকে চিঠি দিয়েছি এ ছাড়া খামারিদের প্রণোদনা দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি তাঁরা এখন দোকান গুলোয় দুধ বিক্রি করতে পারবেন।