পাবলিক লাইব্রেরী মাঠের এক কোণে তৈরি করা হয়েছে প্যান্ডেল, চারিদিকে বাঁশ দিয়ে ঘেরা হয়ছে। বাঁশের তৈরি গেট, সাদা কাপড়ের পর্দায় টানানো হয়েছে উৎসবের বড় একটি ব্যানার। বড় বড় টেবিলে রাখা হয়েছে শতাধিক কাঁঠাল। নাকে আসছে কাঁঠালের মৌ মৌ গন্ধ। সাউনবক্সে বাজছে কাঁঠাল নিয়ে লেখা ভাওয়াইয়া গান। উৎসুক মানুষের ভীড়। সব মিলিয়ে কাঁঠাল নিয়ে একটি প্রাণবন্ত আয়োজন।
পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ জাতীয় ফল কাঁঠাল এ প্রজন্মের কাছে গুরুত্বপূর্ণভাবে তুলে ধরার প্রয়াস থেকেই কাঁঠাল উৎসব ও প্রতিযোগিতার ব্যতিক্রম আয়োজন করে সাহিত্যের কাগজ মৌচাক।
শুক্রবার(২৪ জুন) সকাল সাড়ে ১০ টায় জাতীয় সংগীতের মধ্যদিয়ে উদ্বোধন হয় কাঁঠাল উৎসবের। উৎসবে কাঁঠাল
খাওয়া প্রতিযোগিতা, কাঁঠাল বিষয়ক ছড়া লেখা প্রতিযোগিতা, কাঁঠাল গাছের চারা বিতরণ করা হয়।
উৎসবের ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি রংপুর জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা মোতাহার হোসেন মন্ডল মওলা। জাতীয় ফল কাঁঠাল এর পুষ্টি নিয়ে আলোচনা করেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ মফিজুল ইসলাম মান্টু, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান।
কাঁঠাল প্রতিযোগিতায় মৌচাক এর প্রধান উপদেষ্টা লেখক ও গবেষক রেজাউল করিম মুকুল এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষৎ এর সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন, সিটি প্রেসক্লাব রংপুর সভাপতি স্বপন চৌধুরী, অভিযাত্রিক সভাপতি লেখক রানা মাসুদ, রংপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক এডভোকেট আতিক উল আলম কল্লোল। আরো বক্তব্য রাখেন কবি ও সাংবাদিক মাহবুবুল ইসলাম, রংপুর প্রেসক্লাব সভাপতি মাহবুব রহমান, ভাওয়াইয়া শিল্পী খ ম আলী সম্রাট, ভিপি আলা উদ্দিন, আইয়ুব আলী, মহিলা পরিষদ রংপুর সাধারণ সম্পাদক রুমানা জামান, সিটি প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মানিক, ছড়াকার ও গীতিকার এস এম খলিল বাবু, সাংবাদিক আব্দুর রহমান মিন্টু, সরকার বাবলু, কবি মাসুদ বশীর, লুৎফর রহমান, কবি সওদা খানম মিনু প্রমুখ।
সঞ্চালনা করেন মৌচাক সম্পাদক রেজাউল করিম জীবন।
উদ্বোধনী শেষে নারী পুরুষ উভয় গ্রুপে উপস্থিত কাঁঠাল খাওয়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় নারী ক্যাটাগরিতে ১ম হন এসএম ইতি, ২য় রুমকি রহমান, ৩য় শাহিনা বেগম এবং পুরুষ ক্যাটাগরিতে ১ম হন সোহানুর রহমান শাহিন, ২য় স্বপন চৌধুরী, ৩য় এস এ অপু। এছাড়া দেশব্যাপী কাঁঠাল বিষয়ক ছড়া লেখায় ১ম হন দিনাজপুরের লুৎফর রহমান, ২য় গাইবান্ধার আতাউর রহমান লিটন, ৩য় ঢাকার উম্মে হাবিবা সূচনা।
প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন মৌচাক উপদেষ্টা আলেয়া খাতুন লাভলী, সাঈদ সাহেদুল ইসলাম, এসএম সাথী বেগম,
সাহিনা সুলতানা, কবি এটিএম মোর্শেদ। পুরস্কার বিতরণ শেষে কাঁঠাল নিয়ে লেখা ভাওয়াইয়া গান পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী ও সুরকার ফারহান শাহীল লিয়ন।
সবশেষে কাঁঠাল গাছের চারা বিতরণ করা হয়। পরে উপস্থিত সকলে খই ও কাচা মরিচের ভর্তা দিয়ে কাঁঠাল খান।
সাহিত্যের কাগজ মৌচাক এর কাঁঠাল প্রতিযোগিতার অর্থ কুড়িগ্রাম ও রংপুরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে বিতরণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।