আবু হানিফ, বাগেরহাট অফিসঃ
বাগেরহাটের শরণখোলায় মাকে জিম্মি করে অনার্স পড়ুয়া এক ছাত্রীকে দলবল নিয়ে ফিল্মি স্টাইলে তুলে নিয়ে গেছে সুজন গাজী (২৯) নামের এক মাদক কারবারী। পুলিশ অপহরণের ১৫ ঘন্টা পর মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নিয়েছে।
এব্যাপারে অপহৃত ছাত্রীর পিতা জাহাঙ্গীর হাওলাদার বাদী হয়ে শরণখোলা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।এদিকে অপহরণকারী ও তার দলবলের অব্যাহত হুমকিতে অপহৃত ছাত্রীর পরিবার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। সমাজের প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা এগিয়ে না আসায় পরিবারটি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
অপহৃতের পিতা উপজেলার মঠেরপাড় গ্রামের জাহাঙ্গীর হাওলাদার জানান, একই গ্রামের মোঃ ফারুক গাজীর পুত্র সুজন গাজী প্রায় সময় তার মেয়েকে উত্যাক্ত করতো। সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি বাড়িতে না থাকায় সুজন তার ৬/৭ জন মাদকাসক্ত বন্ধুকে নিয়ে তার বাড়িতে আসে।
অপহরণকারীরা ভয়ভীতি দেখিয়ে তার স্ত্রী ময়না বেগমকে জিম্মি ও আসবাবপত্র তছনছ করে মেয়েকে ফিল্মি স্টাইলে তুলে নিয়ে যায়। এসময় অপহরণকারীদের হামলায় তার স্ত্রী আঘাতপ্রাপ্ত হন। তিনি জানান, সুজন ও তার দলবল খুবই দুর্দান্ত। মামলা করলে তারা কেউ বাড়ি থাকতে পারবেন না।
তার মেয়ে শরণখোলা সরকারি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। শরণখোলা থানার অফিসার ইন চার্জ এসকে আব্দুল্লাহ আল সাইদ জানান, খবর পেয়ে তারা অভিযান চালিয়ে অপহরণের ১৫ ঘন্টা পর বানিয়াখালী এলাকা থেকে অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধার করেন। ওই ছাত্রী এখন তাদের হেফাজতে থানায় রয়েছেন।
অপহৃত ছাত্রীর পরিবারটি ভয়ে মামলা করতে প্রথমে রাজি হননি। পরে তাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে বুজিয়ে রাজি করানো হয়েছে। বুধবার দুপুরে ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ সুজনের অজ্ঞাত ৫/৬ জন বন্ধুর নামে মামলা দায়ের করেছেন।
মাদক কারবারী সুজনের বিরুদ্ধে এর আগে শরণখোলা থানায় একাদিক মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সুজনের পিতা মোঃ ফারুক গাজী বলেন, তার ছেলের কারনে তিনিও খুব অতিষ্ট। সুজন মাদকাসক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি কয়েকবার পুলিশ হেফাজতে দিতে চেয়েছিলেন, কিন্ত আইনি প্রক্রিয়ার কারনে পারেননি।
তিনি এখন সুজনকে আইনের আওতায় আনার জন্য সকল প্রকার সহযোগীতা করবেন।
সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য ও সুজনের মামা মোঃ জাহাঙ্গীর তালুকদার বলেন, সুজন বখাটে হয়ে যাওয়ার পর থেকে আমরা তার পরিচয় তেমন প্রকাশ করি না।
ওই ঘটনার আমরা কোন সমর্থনও দেই না। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন খান মহিউদ্দিন জানান, ওই ছাত্রীর পিতা তার কাছে এসে ঘটনা জানালে তিনি পুলিশের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।