নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে অভ্যন্তরীণ বোরো ধান, চাল সংগ্রহ অভিযান ব্যর্থ হয়েছে। অভিযানের উদ্বোধনের দিন থেকে ২৯ আগষ্ট পর্যন্ত ধান ৩ হাজার ৩৪১ মেট্রিকটনের স্থলে মাত্র ৩২ মেট্রিকটন এবং আতব চাল ৩৩৭ মেট্রিকটন সরবরাহের চুক্তি থাকলেও শুন্যের কোঠায় রয়েছে। তবে সিদ্ধ চাল ৩ হাজার ৩৯৬ মেট্রিকটনের স্থলে মাত্র ১হাজার ৭০৫ মেট্রিকটন সংগ্রহ করা হয়েছে।
ফলে চাল সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ যে সকল মিলাররা চাল দিতে ব্যর্থ হয়েছেন বা অসহযোগিতা করেছেন সমপনান্তে তাদের বিরুদ্ধে চুক্তিপত্র ও চালকল লাইসেন্স ইস্যু সংক্রান্ত বিধিবিধানসহ প্রাসঙ্গীক আইন বিধি অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে মর্মে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা বরাবর একটি পত্র দিয়েছেন খাদ্য অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ শাখা থেকে।
জানা গেছে, গত ১৩ মে, রাণীনগর উপজেলায় অভ্যন্তরীণ ইরি/বোরো মৌসুমে ২৬ টাকা কেজি দরে সরাসরি কৃষকের নিকট থেকে ৩ হাজার ৩৪১ মেট্রিকটন ধান,৩৬ টাকা কেজি দরে মিলারদের নিকট থেকে ৩হাজার ৩৯৬ মেট্রিকটন সিদ্ধ চাল এবং ৩৫ টাকা কেজি দরে ৩৩৭ মেট্রিকটন আতব চাল সংগ্রহের উদ্বোধন করা হয়।
স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সরাসরি কৃষকদের নিকট থেকে ধান সংগ্রহের লক্ষে রাণীনগর উপজেলার আটটি ইউনিয়নের কৃষক নির্বাচনের জন্য উন্মুক্ত লটারীর মাধ্যমে মোট এক হাজার ৬৬৮ জন কৃষক নির্বাচন করা হয়। নির্বাচিত প্রতিজন কৃষক দুই মেট্রিকটন করে সরকারি খাদ্য গুদামে ধান দিবেন।
এছাড়া সিদ্ধ চাল সরবরাহে ১২৩ জন মিলার এবং আতব চাল সরবরাহে ২জন মিলারের সাথে চুক্তি করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চাল সরবরাহের কথা থাকলেও সিদ্ধ চাল মাত্র ১হাজার ৭০৫ মেট্রিকটন সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া মিলাররা আতব চাল সরবরাহ করেননি।
তবে ধানের ক্ষেত্রে কৃষকরা বলছেন,এযাবতকালে এমৌসুমেই ধানের দাম বেশি পাচ্ছি আমরা। সরকারী খাদ্যগুদামে প্রতিমন ধান ক্রয় করছেন একহাজার ৪০ টাকা । আবার ধানের মান,আদ্রতা,ব্যাংক একাউন্টসহ নানা বিধ ঝামেলা রয়েছে । তাছাড়া স্থানীয় বাজারে ধান বিক্রি করে সরকারী খাদ্যগুদামের চাইতে মনপ্রতি একশ’ থেকে ১৫০ টাকা বেশি পাচ্ছি ।
তাই বাজারেই ধান বিক্রি করছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম জানান, গত ইরি/মোরো মৌসুমে উপজেলা জুরে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ করা হয়েছিল।এতে প্রায় এক লক্ষ ২০ হাজার মেট্রিকটন ধান উৎপাদন হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাণীনগর উপজেলা চালকল মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিতানাথ ঘোষ জানান,এবার প্রাকৃতিক দূর্যোগ আমপান এবং বন্যার কারনে চুক্তি অনুযায়ী ৫০% চাল সরবরাহ করা হয়েছে । আমরা অতিরিক্ত সময় চেয়ে সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছি । আশা করছি সংশ্লিষ্ঠরা আমাদের আবেদন মঞ্জুর করবেন এবং ওই সময়ের মধ্যে চাল সরবরাহ করতে পারবো।
উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, উদ্বোধনের পর থেকে ২৯ আগষ্ট পর্যন্ত মাত্র ৩২ মেট্রিকটন ধান এবং ১হাজার ৭০৫ মেট্রিকটন সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে আতব চাল সরবরাহ করেননি চুক্তিবদ্ধ মিলাররা।
রাণীনগর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন,আমরা চুক্তিবদ্ধ মিলারদেরকে বেশ কয়েক দফা চিঠি দিয়েছি এবং বৈঠক করেছি । তার পরেও কোন লাভ হয়নি। ইতি মধ্যে গত ২০ আগষ্ট খাদ্য অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ শাখা থেকে মিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একটি পত্র পেয়েছি। নির্ধারিত সময় অন্তে পত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।