বিডি ২৪ নিউজ রিপোর্ট: বরগুনার আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গোয়াল ঘর তৈরি করে গরু লালন পালন করছেন দুই প্রভাবশালী। এতে পরিবেশ চরম আকারে দুষিত হচ্ছে।
স্থানীয় প্রভাবশালী শাহ আলম হাওলাদার ও ফোরকান হাওলাদার প্রভাব খাটিয়ে গোয়াল ঘর তৈরি করছেন।গত তিন মাস ধরে বিদ্যালয়ে গরু লালন-পালন করায় শিক্ষার্থীরা পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। বর্জ্য চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ায় রোগ ব্যাধি ছড়াচ্ছে এবং শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। এমন কাজের সঙ্গে জড়িতের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলার পশ্চিম সোনাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করেছে। গত তিন মাস ধরে ওই বিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় গোয়াল ঘর তৈরি করে স্থানীয় প্রভাবশালী শাহ আলম হাওলাদার ৫টি গরু ও ফোরকান হাওলাদার ৩টি মহিষ লালন পালন করছেন। এতে বিদ্যালয়ের পরিবেশ চরম আকারে দুষিত হচ্ছে। বর্জ্য চারিদিকে ছড়িয়ে পরায় পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পরেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। পচা দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের রোগব্যাধিতে আক্রান্ত এবং ক্লাশে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের নিষেধ করা সত্ত্বেও তারা তা মানছেন না- এমন অভিযোগ প্রধান শিক্ষক নাসিমা আক্তারের। দ্রুত ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বিদ্যালয় ভবনের গোয়াল ঘরে ৫টি গরু ও ৩টি মহিষ বাঁধা আছে। গরু-মহিষের খাবারে খড়-কুটা ও ঘাসে একাকার হয়ে আছে। গোবর ও খড়-কুটার বর্জ্য চারদিকে পচা দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। বিদ্যালয় মাঠ বর্জ্যে ভরে গেছে। শিক্ষার্থীদের নাক চেপে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে হচ্ছে। মশা-মাছি ছড়িয়ে পড়ছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানজিল, সাদিয়া, সাব্বির ও মুসাদ্দিকা বলে- বিদ্যালয়ে গোয়াল ঘর থাকায় পরিবেশ চরম আকারে দূষিত হচ্ছে। পচা দুর্গন্ধে শ্রেণিকক্ষে টেকা দায়। দ্রুত বিদ্যালয় থেকে গোয়াল ঘর অপসারণের দাবি তাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বলেন, গত তিন মাস ধরে শাহ আলম হাওলাদার ও ফোরকান হাওলাদার বিদ্যালয় ভবনে গোয়াল ঘর তৈরি করেছেন। দিন-রাত গোয়াল ঘরে গরু ও মহিষ রাখা হচ্ছে। গোয়াল ঘরের বর্জ্য চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। দ্রুত বিদ্যালয় থেকে গোয়াল ঘর অপসারণের দাবি তাদের।
বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোসা. নাসিমা আক্তার বলেন, শাহ আলম হাওলাদার ও ফোরকান হাওলাদার জোর করে ভবনে গোয়াল ঘর তৈরি করেছেন। এতে বিদ্যালয়ের পরিবেশ চরম আকারে দূষিত হচ্ছে। গোয়াল ঘরের বর্জ্য চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। তাদের বারবার গোয়াল ঘর অপসারণ করতে বলা সত্ত্বেও তারা তা করছেন না।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের বলেছি কিন্তু তারা তাও শুনছেন না।শাহ আলম হাওলাদার বলেন, বিদ্যালয় ভবনে গোয়াল ঘর তৈরি করা আমার ভুল হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই গোয়াল ঘর সরিয়ে নেওয়া হবে।
আমতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সফিউল আলম বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই। খোঁজখবর নিয়ে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।তিনি আরও বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি গোয়াল ঘর অপসারণ না করেন তাহলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।