গৌরনদীতে হাসপাতালের ভেতরে অ্যাম্বুলেন্স চালকদের সংঘর্ষ, আহত ৭
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর, ২০২৫, ২:০৩ পূর্বাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ
বিডি ২৪ নিউজ রিপোর্ট: বরিশালের গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালকদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় পুরো হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং আধা ঘণ্টা চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হয়। এ সময় হাসপাতালে আনা এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতাল চত্বরে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স পার্কিং করার কারণে রোগী ও তাদের স্বজনদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছিল। সম্প্রতি নিযুক্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শাহতা জারাব সালেহিন হাসপাতালের ভেতরে সর্বোচ্চ তিনটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স রাখার নির্দেশ দেন। বাকিগুলো বাইরে পার্কিংয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দুপুর একটার দিকে স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স মালিক জাবেদ সেলিম অপর অ্যাম্বুলেন্স মালিক জামাল সিকদারকে তার দুইটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্য থেকে একটি ভেতরে রাখতে বলেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। কিছুক্ষণের মধ্যে উভয় পক্ষের অনুসারীরা সংঘর্ষে জড়ালে সাতজন আহত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে রোগী ও স্বজনরা আতঙ্কে দৌড়াদৌড়ি শুরু করলে হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষ চলাকালে নূর মোহাম্মদ আকনের ছেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হাফিজুর রহমান (৬০) নামে এক রোগীকে হাসপাতালে আনা হয়। তখন জরুরি বিভাগের দরজা বন্ধ থাকায় তার স্বজনরা ধাক্কাধাক্কি করতে থাকলে একপর্যায়ে তার মৃত্যু হয়।
তবে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা দাবি করেন, হাফিজুর রহমানকে আনার আগেই তিনি মারা গিয়েছিলেন। ইসিজি পরীক্ষার মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানান তারা।
আহত জাবেদ সেলিমের ভাই সালাম বেপারী অভিযোগ করেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার নির্দেশে অন্যান্য চালকদের জানাতে গেলে জামাল সিকদার ও তার লোকজন পরিকল্পিতভাবে তার ভাইয়ের ওপর হামলা চালায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে তাকে ও ইলিয়াস সরদার নামে অপর এক স্বজনকেও মারধর করা হয়।
অন্যদিকে জামাল সিকদারের ছেলে সাইদ সিকদার অভিযোগ করেন, সেলিম ও তার সহযোগীরা তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণের প্রতিবাদ জানাতে গেলে উল্টো তারাই হামলা চালায়। এতে তার বাবা, ভাই শাহাদাত ও হেলপার রাহাত ঘরামী আহত হন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শাহতা জারাব সালেহিন বলেন, ‘হাসপাতালের ভেতর সংঘর্ষের খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে। রোগীদের নিরবচ্ছিন্ন চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে আমরা উপজেলা প্রশাসন ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’