অনলাইননিউজ: এক তরফা সিদ্ধান্তে বছর জুড়ে অন্তত ১০ দিন মুসলমানদের জন্য পুরোপুরি মসজিদ বন্ধ রাখা হয় ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের দক্ষিণাঞ্চলীয় হেবরন শহরে অবস্থিত ঐতিহাসিক ইব্রাহিমী মসজিদ (হারামে ইবরাহিমি)। এই দিনগুলোতে ইহুদিরা এখানে উৎসব পালন করে।
একইভাবে মুসলিম ধর্মীয় দিবসেও ১০ দিন ইহুদিদের জন্যও বন্ধ রাখা হয়। তবে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় গণহত্যা শুরুর পর থেকে মুসলমানদের জন্য এ নিয়ম মানা হয়নি।
ফিলিস্তিন বিজয়ের পর ১৫ হিজরিতে মুসলমানেরা এখানে মসজিদটি নিমার্ণ করেন। মসজিদটি বিভিন্ন সময় ইহুদি ও ক্রুডেস দখলের আওতায় ছিল।
৫৮৭ হিজরিতে আল আকসা বিজেতা সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ূবি মসজিদটি পুনরুদ্ধার করেন। মসজিদটি ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত মুসলমানেদের অধীনে ছিল। ১৯৬৭ সালে ৪ জুন এতে ইসরায়েলি পতাকা স্থাপন করে দখলদার বাহিনী।
১৯৯৪ সালে এক চরমপন্থি ইহুদি বন্দুকধারীর হামলায় ২৯ জন মুসল্লি শহীদ হওয়ার পর থেকে মসজিদটির ৬৩ শতাংশ অংশ ইহুদিদের এবং মাত্র ৩৭ শতাংশ মুসলমানদের জন্য বরাদ্দ করে দেয় ইসরায়েল। আজানের ঘরটিও রাখা হয় ইহুদিদের অংশে।
বর্তমানে হেবরনের পুরোনো শহরাঞ্চলে অবস্থিত এই মসজিদ পুরোপুরি ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণে। সেখানে প্রায় ৪০০ ইহুদি বসতি স্থাপনকারী বাস করে, যাদের নিরাপত্তায় রয়েছে অন্তত দেড় হাজার ইসরায়েলি সেনা।
সাম্প্রতিক সময়েও ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের দক্ষিণাঞ্চলীয় হেবরন শহরে অবস্থিত ঐতিহাসিক ইব্রাহিমী মসজিদ (হারামে ইব্রাহিমী) তিন দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।
সোমবার ফিলিস্তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ইসরায়েলি সেনারা মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মসজিদের সব রকম কার্যক্রম বন্ধ রাখবে, অজুহাত হিসেবে দেখানো হয়েছে তথাকথিত ‘ইহুদি ধর্মীয় উৎসব’।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এ পদক্ষেপকে মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রকাশ্য লঙ্ঘন এবং পবিত্র মসজিদকে লক্ষ্য করে চালানো সুপরিকল্পিত তৎপরতা হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে।
তারা সতর্ক করে বলেছে, অধিকৃত বাহিনী ধীরে ধীরে মসজিদের ধর্মীয় স্বকীয়তা ধ্বংস করছে। এতে আজান বন্ধ রাখা, মুসল্লিদের প্রবেশে বিভিন্ন বাধা, গেটে ইলেকট্রনিক চেকপোস্ট বসানো, তল্লাশি চালানো এবং মসজিদের কর্মীদের কাজে বাধা দেওয়ার মতো পদক্ষেপও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক মহল ও ইউনেসকোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করে এসব দখলদারি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়।
ইসরায়েল গত সপ্তাহেও একই অজুহাতে মসজিদ বন্ধ রেখেছিল। এবারও তথাকথিত ‘ইয়োম কিপুর’ বা ইহুদি ধর্মীয় দিবসের আগে একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।