রবিবার ১২ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ ২৭শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ই-পেপার   রবিবার ১২ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ



সূর্যমুখী চাষ বেড়েছে
প্রকাশ: ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৩:২৩ অপরাহ্ণ |
অনলাইন সংস্করণ

সূর্যমুখী চাষ বেড়েছে

॥ দিলরুবা খাতুন ॥
ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে কৃষিসমৃদ্ধ মেহেরপুর জেলায় সূর্যমূখী চাষ বাড়ছে। সারাদেশে এচাষ সম্প্রসারণে জেলা সদরের ‘আমঝুপি তৈলবীজ উৎপাদন খামারে’ সূর্যমুখীর বীজচাষ চলছে। জেলায় রবিশস্যের চাষাবাদে ২০২০ সাল থেকে সূর্যমুখী চাষ বেড়েছে। এ অঞ্চলের মাটির গুণাগুণ, আবহাওয়া ও জলবায়ু সূর্যমুখী চাষাবাদের জন্য উপযোগী হওয়ায় এটির চাষাবাদ কৃষকের কাছে জনপ্রিয় ও আগ্রহী করে তুলতে জেলার একমাত্র তৈলবীজ খামার আমঝুপিতে সুর্যমুখির বীজ উৎপাদনে চাষ করা হয়েছে। সূর্যমুখী চাষ হলে দেশের ভোজ্য তেলের ঘাটতি পূরণ হবে। সূর্যমুখী একটি তেল জাতীয় ফসল। এটি স্থানীয়ভাবে উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবেও পরিচিত। ভোজ্য তেলের মধ্যে সূর্যমুখী শরীরের জন্য অত্যন্ত ভালো তেল। এটি শরীরের কোলেস্টেরল ঠিক রাখে। তাই সূর্যমুখীর চাষাবাদ কৃষকের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে আমঝুপি বীজ উৎপাদন খামারে এবারও ২০ বিঘা জমিতে চাষ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জেলায় বিভিন্ন কৃষক ব্যক্তি উদ্যোগে আরো ৩০ বিঘা জমিতে চাষ করেছে। এসব সূর্যমুখী চাষের জমিতে ফুলে ফুলে ভরে গেছে।
একধরনের একবর্ষী ফুল সূর্যমুখী । ওই ফুল দেখতে কিছুটা সূর্যের মতো বলে এর নাম সূর্যমুখী। ফুলের পাপড়ি খেতে বাগানে আসে বিভিন্ন পাখি। ওড়াউড়ি করে বাগানময়। গত তিনবছর ধরে আমঝুপি তৈলবীজ উৎপাদন খামারে বীজের জন্য সূর্যমুখীর চাষ হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার মানুষ সূর্যমুখী ফুলের বাগানে ছুটে আসছে বিনোদনের জন্য। দর্শনার্থীদের কেউ ফুল ছিড়ে বীজ উৎপাদনে ব্যাহত করে এজন্য তাদের ঠেকাতে লোকবল নিয়োগ দিয়েছেন খামার কর্ত্তৃপক্ষ।
মেহেরপুর জেলা শহর থেকে চুয়াডাঙ্গা সড়কে আমঝুপি বীজ উৎপাদন খামার যেন সূর্যমুখী ফুলের রাজ্য। এখানে হলুদ রঙের ঝলকানি দেখতে ছুটে আসছে শত শত নারী পুরুষ। শুক্রবার শনিবার ছুটির দিনে মানুষের ঢল নামে সেখানে। বিশেষজ্ঞদের মতে সূর্যমুখী ফুল শুধু দেখতে রূপময় নয়, গুণেও অনন্য। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সূর্যমুখী মাঠটি। এখানে আগেই এসেছে বসন্ত। মৌমাছিরা শেষ বিকেলে ব্যস্ত হয় সূর্যমুখী ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে । এখানে আসা দর্শনার্থীরা নির্মল বাতাস ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করেন। আগত সিংহভাগ দর্শনার্থীদের দেখা যায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে, কেউবা নিজেকে ক্যামেরাবন্দি করতে ব্যস্ত। কেউবা ব্যস্ত টিকটকে ভিডিও তৈরিতে। তবে খামার কর্ত্তৃপক্ষ মোটেও খুশি নন দর্শনার্থীদের আগমনে। কারণ দর্শনার্থীরা বাগানে ঢুকে ফুল ছিড়ে উৎপাদন ব্যাহত করছে। ফুলছেড়া প্রতিরোধে থাকা খামারের শ্রমিক রফিকুল ইসলামের অভিযোগ, আগত দর্শনার্থীরা সূর্যমুখী গাছ ভেঙে ফেলেন। ফুলও ছিড়ে ফেলেন। তাই দর্শনার্থীদের কাছে তাদের অনুরোধ, তারা যেন সূর্যমুখী গাছ ও ফুলের কোনো ক্ষতি না করেন। মাহবুবুল মন্টু স্বপরিবারে সৌন্দর্য উপভোগে এসেছেন। তিনি জানান, প্রাকৃতিক দৃশ্য ও ফুল তাদের খুব ভালো লাগে। এজন্য কদিন থেকে তারা স্বপরিবারে জেলা শহর থেকে পড়ন্ত বিকেল পর্যন্ত উপভোগ করেন ফুলের। মন্টুর সহধর্মিনী ফাতেমা বিনতে রাশেদ জ্যোতি জানান- তাদের বাড়িতে দুইশ প্রজাতির ফুলের বাগান। ফুল ও প্রকৃতি তার প্রিয়। এজন্য পরিবার নিয়ে তিনি গত দশদিন ধরে বিকেলে এখানে বেড়াতে আসেন।
মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কে আমঝুপি তৈলবীজ উৎপাদন খামারে সূর্যমুখীর হলুদ ফুলের সমারহ। ফুলের সৌন্দর্য দেখতে আসছে দর্শনার্থীরাও। অনেকেই আসছেন ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি এটি চাষ করার পরামর্শও নিচ্ছেন।
মেহেরপুর আমঝুপি তৈলবীজ উৎপাদন খামারের উপ-সহাকারী পরিচালক আবু তাহের সরদার জানান- অন্য ফসলের চেয়ে সূর্যসুখী চাষে খরচ কম। এতে সার ওষুধ কম লাগে। তেমন পরিচর্যাও করতে হয় না। তা ছাড়া অন্যান্য তৈল বীজ যেমন সরিষা ও তিল এর চেয়ে তেলও বেশি পাওয়া যায়। পুষ্টি চাহিদা পূরণে সুর্যমূখী তেলের জন্য বিদেশ থেকে এর বীজ আমদানি করতে হয়। দেশে এর আবাদ করা গেলে বিদেশ থেকে এর আমদানী কমে যাবে। এটি নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে সারিবদ্ধভাবে বীজ বপন করা হয়। বীজ বপনের ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়। সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ও দু’বার সেচ দিতে হয় এ ফসলে। প্রতি একর জমিতে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা খরচ হয়। আর এক একর জমির উৎপাদিত বীজ থেকে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। সূর্যমুখী গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক ও সিইও: মামুনুর রশীদ নোমানী

ইমেইল: nomanibsl@gmail.com

মোবাইল: 01713799669 / 01712596354

 

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি।

© বিডি ২৪ নিউজ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

  টেইলার্সের কারখানা থেকে শ্রমিকের লাশ উদ্ধার   পটুয়াখালীতে র‍্যাবের গাড়ি ও বাসের সংঘর্ষে নিহত তিন   বরিশাল-কুয়াকাটা সড়কের হাজিপুর সেতুতে নির্ধারিত টোলের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়   মেহেন্দীগঞ্জে জেলেদের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ,নিখোঁজ জেলের লাশ উদ্ধার   বরিশাল বিভাগ প্রতিষ্ঠার ৩৩ বছর পর বরিশাল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনের সিদ্ধান্তে আনন্দে নগরবাসী   বরিশালের ৬টি আসনে হেভিওয়েটের ছড়াছড়ি, থাকছে বিদ্রোহীর শঙ্কা   বরগুনায় সমাজসেবা উপপরিচালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ   বিএনপি নেতা লিটনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা   পটুয়াখালীতে ‎৩৫তম আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা   সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতে ইলিশ শিকারের দায়ে ১১ জেলের কারাদণ্ড   ভোলা উপকূলে ‘মা’ ইলিশ রক্ষায় রেড অ্যালার্ট, জেলেদের ঋণের কিস্তি নেয়ায় নিষেধাজ্ঞা   বরিশালে ভুয়া জেলে কার্ডের ছড়াছড়ি,প্রকৃত জেলেরা দুর্দশায়   বরিশালে উচ্ছেদ হলো আদালতের ন্যায়কুঞ্জে গড়া হোটেল   আমতলীতে ১৬ শিক্ষক-কর্মচারীর মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী ১৫   বরিশালে বিএনপি নেতাসহ দুই ভাইয়ের ধর্ষণে এক গৃহপরিচারিকা অন্ত:সত্ত্বা   ময়মনসিংহের তারাকান্দায় ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা   খুলনায় গুলি করে এক যুবককে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা   বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাত ধ্বংস করতে জাল নোট তৈরি, আ.লীগের নতুন পরিকল্পনা ফাঁস!   খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারায় সহিংসতার ঘটনায় তিন মামলা   টেকনাফ থেকে নারী-শিশুসহ ২১ জনকে জীবিত উদ্ধার
Translate »