ময়মনসিংহে দেশে প্রথম ধনুক সেতু নির্মাণ হবে ব্রহ্মপুত্র নদে। এই সেতুটি ১১শ মিটার দৈর্ঘ্যরে এ সেতুর নদীর মধ্যে কোনো পিলার থাকবে না। ব্রিজটি দেখতে হবে ধনুকের মতো। একে দেশের প্রথম মডেল ব্রিজ হিসেবে নেওয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে ৩ হাজার ২৬৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ময়মনসিংহে ‘কেওয়াটখালী সেতু নির্মাণ’ নামে প্রকল্প নিয়েছে সরকার। প্রকল্পটি মঙ্গলবার চূড়ান্তু অনুমোদনের হয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উত্থাপন করার কথা রয়েছে। একনেক চূড়ান্ত অনুমোদন দিলে জুলাই ২০২১ থেকে জুন ২০২৫ মেয়াদে প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, পৃথিবীবিখ্যাত ব্রিজগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার ‘সিডনি হারবার ব্রিজ’। এই ব্রিজের আদলেই হবে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর ব্রিজ। প্রকল্পে চীনের নেতৃত্বাধীন এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) ঋণ সহায়তা ১ হাজার ৯৩০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। বাকি ১ হাজার ৩৫৩ কোটি ৮৩ লাখ ৪৩ হাজার টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে মেটানো হবে।
জানা গেছে, প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় ৩২০ দৈর্ঘ্যরে মূল সেতু, ৭৮০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সংযোগ সেতু, ৫৫১ মিটার দৈর্ঘ্যরে সড়ক ওভারপাস, ২৪০ মিটার দৈর্ঘ্যরে রেলওয়ে ওভারপাস ও ৬.২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এসএমভিটি লেনসহ ৪ লেনের মহাসড়ক নির্মাণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় উল্লিখিত লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ৩৩ দশমিক ২ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ৪৫৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা এবং পুনর্বাসনের জন্য ৯০ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পের ডিপিপিতে সমজাতীয় প্রকল্পের তুলনামূলক বিবরণীতে অন্য প্রকল্পের তুলনায় এ প্রকল্পে মাটির কাজের একক ব্যয় অধিক দেখানোর যৌক্তিকতা সম্পর্কে জানতে চেয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
এ প্রযুক্তির স্টিল আর্চ (ধনুক) ব্রিজ নির্মাণ তদারকির জন্য ৮৫২ জন মাস পরামর্শক সেবা ক্রয়ে ৮১ কোটি ১৬ লাখ ২৪ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে পরামর্শকের কর্মপরিধি ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) সংযুক্ত করা হয়নি। পরামর্শক সেবার ব্যয় অত্যধিক বলে দাবি করেছে পরিকল্পনা কমিশন। ব্যয় কমানোর জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন বলছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ময়মনসিংহ বিভাগের কয়েকটি জেলাসহ এ অঞ্চলের স্থলবন্দর, ইপিজেড এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর সঙ্গে রাজধানী ঢাকার নিরাপদ ও উন্নত যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক কার্যক্রমগুলো ত্বরান্বিত হবে। এটি জিডিপি বৃদ্ধি, শিল্প উন্নয়ন, নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।